ডুমুর ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুন বিস্তারিত জানুন
ডুমুর ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুন বিস্তারিত জানুন? ডুমুর ফল বিভিন্ন ধারনের পুষ্টিগুন ও ঔষধি গুনাগুন সমৃদ্ধ একটি ফল। ডুমুর ফল শারিরীক ও মানুষিক রোগের মহাঔষধ। কিন্তু এখনো প্রায় অধিকাংশ মানুষিই ডুমুর ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবংপুষ্টিগুন সম্পর্কে জানে না।
তাই আমরা এই আর্টিকেলটিতে ডুমুর ফলের উপকারিতা ,অপকারিতা, পুষ্টিগুন এবং ডুমুর ফল কিভাবে খেতে হয় অর্থ্যাৎ কাঁচা,পাকা,শুকনা নাকি শিদ্ধকরে খাবো এবং ডুমুর ফল ত্বকের কি উপকার করে ইত্যাদি বিষয়গুলি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। তাই ডুমুর ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা জানতে এই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভূমিকা
ডুমুর অসাধারণ গুনাগুন সমৃদ্ধ একটি ফল। ডুমুর ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুন অনেক। ডুমুর ফল মানুষের শরীরে আক্রান্ত হওয়া বিভিন্ন রোগের নিরাময়ক হিসেবে কাজ করে। যেমন -হার্ট জনিত সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, ওজন বৃদ্ধি, হাড় দুর্বল,ত্বকের সমস্যাসহ বিভিন্ন ধরনের রোগের মহাঔষধ হিসেবে কাজ করে ডুমুর ফল নিচে ডুমুর ফল সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো
ডুমুর ফল কি?
ডুমুর ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানার আগে ডুমুর ফল সম্পর্কে আমাদের কিছু কথার জেনে রাখা উচিত। ডুমুর ফল হলো এক ধরনের নরম ও মিষ্টি জাতীয় ফল। ডুমুর ফলের উপরের আবরণ অনেক পাতলা ও নরম হয় এবং অভ্যন্তরে ছোট ছোট অনেক বীজ থাকে। ডুমুর পিক বা আন্ঞ্জির নামেও পরিচিত। ডমুর গাছের বৈজ্ঞানিক নাম হল ফিকাস কেরিকা(Ficus Carica)।
ডুমুর গাছ বা ফলের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে। যেমন- কাকডুমুর আন্ঞ্জির ডুমুর,জগা ডুমুর এবং অশ্বথ ডুমুর ইত্যাদি। বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষ ডুমুরের ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে জানেনা তাই অযত্ন এবং অবহেলায় বেড়ে ওঠে ডুমুর গাছ।ডুমুর বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া গেলেও বিশেষ করে উষ্ণ জলবায়ুর অঞ্চলে এই প্রজাতির গাছ বেশি জন্মে পাশাপাশি পার্বত্য অঞ্চল যেমন খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি, চট্টগ্রাম, সিলেট ইত্যাদি অঞ্চলেও ডুমুর গাছ পাওয়া যায়।
ডুমুর মৌসুম ভিত্তিক ফল হওয়া সত্ত্বেও যেহেতু ডুমুর শুকনো অবস্থায় খাওয়া যায় তাই সারা বছর ডুমুর ফল পাওয়া যায়। ডুমুর এশিয়ার মধ্যপ্রাচ্য অর্থাৎ তুরস্ক থেকে উত্তর ভারত পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে এই গাছ পাওয়া যায় তবে ভূমধ্যসাগরীয় দেশগুলোতে প্রাকৃতিক ভাবে ডুমুর গাছের চারা জন্মে। তবে ডুমুরের ফলের মধ্যে ঔষধি গুন থাকায় বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ দেশেই এখন ডুমুরের চাষ করা হয়।
ডুমুরের বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
বৈজ্ঞানিক নাম ------------- Ficus Carica
জগৎ ------------------------ Plantae
শ্রেণীবিহীন ----------------- Angiosperms, Eudicots, Rosales
বর্গ --------------------------- Rosales
পরিবার --------------------- Moraceae
গোত্র ------------------------ Ficeae Gaudich
গণ --------------------------- Ficus L.
ডুমুর ফলে বিদ্যমান উপাদানসমূহ
খাদ্য শক্তি -------------------------- ৩৭ গ্রাম
জলীয় অংশ ----------------------- ৮৮.১ গ্রাম
খনিজ পদার্থ ---------------------- ০.৬ গ্রাম
লৌহ ------------------------------- ১.১ মিলিগ্রাম
ক্যালসিয়াম ----------------------- ৮০ মিলিগ্রাম
হজমযোগ্য আঁশ ----------------- ২.২গ্রাম
শর্করা ------------------------------ ৭.৬ গ্রাম
আমিষ ----------------------------- ১.৩ গ্রাম
চর্বি --------------------------------- ০.২ গ্রাম
ক্যারোটিন ------------------------- ১৬২ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি১ ---------------------- ০.০৬ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি২ ---------------------- ০.০৫ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি ------------------------ ৫ মিলিগ্রামি
এছাড়াও ডুমুর ফলের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক পরিমাণে পটাশিয়াম-৭%, ম্যাগনেসিয়াম ৮%, ফসফরাস, কপার, ম্যাংঙ্গানিজ, ফ্যাটি এসিড,এমিনো এসিড,ভিটামিন,মিনারেল,আয়রন-৬%,জিঙ্ক,ক্যালোরি-৭৮, ফাইবার-২.৯ গ্রাম, ওমেগা-৩ ও ৬,অল্প পরিমানে সোডিয়াম এবং প্রতি ১০০গ্রাম ডুমুরে ০.৮ গ্রাম প্রটিন।
ডুমুর ফলের উপকারিতা
ডুমুর ফলের মধ্যে উপকারিতা ব্যাপক থাকায় শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য বিস্ময়কর ঔষধ হিসেবে কাজ করে। ডুমুর ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুন সম্পর্কে লেখা আর্টিকেলটির মধ্যে এখন আমরা ডুমুর ফল খেলে আমাদের শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য কি কি উপকার হবে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত জানব।
হার্টের সমস্যার সমাধানের ডুমুর ফলের ভূমিকাঃ আমাদের দেহের মধ্যে যখন ট্রাই গ্লিসারাইড নামক চর্বির মাত্রা বেড়ে যায় তখনই আমাদের শরীরের মধ্যে হার্ট সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয়। এর মোকাবেলা করতে পারে ডুমুর ফল। ডুমুর খাওয়ার ফলে রক্তে ট্রাই গ্লিসারাইডের মাত্রা কমে যায় এবং হৃদপিণ্ড সঠিকভাবে কাজ করে। এছাড়াও ডুমুরের ফলে রয়েছে ব্যাপক পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরের ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপকে কমিয়ে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
পাশাপাশি আমাদের দেহ থেকে ফ্রী-রেডিক্যাল দূর করে এবং করোনারী ধমনীতে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না ফলে হৃৎপিণ্ড সুস্থ ও সচল থাকে। ডুমুর ফলে রয়েছে ফেনল, ওমেগা -৩,৬,এবং ফ্যাটি এসিড যা হার্টকে সুস্থ সবল রাখতে সহায়তা করে।
দেহের ওজন কমাতে ডুমুর ফলে ভূমিকাঃ আমাদের দেহের মধ্যে যখন অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি জমা হয় তখন আমাদের দেহের ওজন বৃদ্ধি পায়। আর এই অতিরিক্ত মেদ বা চর্বি কমানোর জন্য আমাদের ডুমুর ফল খেতে হবে। কারণ ডুমুর ফলের মধ্যে রয়েছে ফাইবার যা আমাদের দেহের মেটাবলিজমকে নিয়ন্ত্রণে রাখে ফলে দেহের মধ্যে অতিরিক্ত চর্বি জমাট বাদতে দেয় না।এছাড়াও ফাইবার এমন একটি উপাদান যা আমাদের পেটের খিদা কে নিয়ন্ত্রণে রাখে।
এছাড়াও দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। যার জন্য আমাদের অতিরিক্ত খাবার খেতে হয় না যার কারনে ধীরে ধীরে আমাদের দেহের ওজন কমে। পাশাপাশি ডুমুর ফলের মধ্যে ওমেগা থ্রি এবং ফ্যাটি এসিড রয়েছে যা আমাদের দেহের ওজন কমাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। তাই দেহের অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য আমাদের ডায়েট খাদ্য তালিকায় ডুমুর ফল রাখা উচিত।
হাড়কে মজবুত করতে ডুমুর ফলের ভূমিকাঃ আমাদের দেহর প্রায় অর্ধাংশ হাড় দিয়ে গঠিত। আর এই হারগুলো যখন দুর্বল হয়ে পড়ে তখন আমাদের চলাফেরা এবং ভার উত্তোলন করতে অনেক অসুবিধা ও ব্যথা হয়। এই সমস্যা মূলত ক্যালসিয়ামের অভাবে হয়ে থাকে। যেহেতু ডুমুর ফলের মধ্যে অধিক পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস রয়েছে যা হাড়কে মজবুত ও শক্ত রাখতে সাহায্য করে।
এবং দেহের হাড়জনিত সমস্যা দেখা দেয় না। যেহেতু আমাদের শরীর নিজে নিজে ক্যালসিয়াম উৎপন্ন করতে পারেনা তাই অন্যান্য ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার যেমন -দুধ, সয়া এবং সবুজ শাকসবজি ইত্যাদির পাশাপাশি ডুমুর ফলকেও আমাদের খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে।
কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ডুমুর ফলের ভূমিকাঃ কোষ্ঠকাঠিন্য বা হজম শক্তি বৃদ্ধিতে ডুমুর ফল খুবই কার্যকরী। এমন কিছু খাবার আছে যে খাবারগুলো আমাদের পরিপাকতন্ত্র সহজে হজম করতে না পারায় পেটের মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যার সৃষ্টি হয়। আর এই কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত সমস্যার সমাধানে ডুমুর ফল খুবই কার্যকরী ওষুধ হিসেবে কাজ করে। কারণ ডুমুর ফলের মধ্যে ব্যাপক পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ রয়েছে।
আর এই আঁশ ভিতরে থাকা মলকে নরম করে কোষ্ঠবদ্ধতা দূর হয় এবং মালগুলিকে স্বাভাবিকভাবে বের হতে সাহায্য করে। এছাড়াও ডুমুর ফলের মধ্যে রয়েছে জিংক, আয়রন ও ম্যাগনেসিয়ামের মত উপাদান এবং রয়েছে প্রোবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া যা অন্ত্রে মিশে খাবারকে দ্রুত হজম করে এবং হজম শক্তিকে বৃদ্ধি করে।
হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতে ডুমুর ফলের ভূমিকাঃ ডুমুর ফল রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরে ভিতরে থাকা রক্তের মধ্যে যখন হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে যায় তখন আমাদের দেহে রক্তশূন্যতার দেখা দেয়। যেহেতু ডুমুর ফলের মধ্যে রয়েছে ব্যাপক পরিমাণে আয়রন যে আয়রন রক্তের হিমোগ্লোবিনের মাত্রাকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তশূন্যতা দূর করে।
ডায়াবেটিস এবং রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে ডুমুর ফলের ভূমিকাঃ ডুমুর ফলের মধ্যে বিদ্যমান রয়েছে অত্যাধিক পরিমাণে পটাশিয়াম আর এই পটাশিয়াম দেহের সুগার লেভেল বা চিনির মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। এছাড়াও ডুমুরের ফলের মধ্যে রয়েছে ক্লোরোজেনিক এসিড যা রক্তের শর্করাকে স্বাভাবিক বা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষভাবে কাজ করে। গবেষণা থেকে জানা যায় ডুমুর ফলের মধ্যে এক প্রকার হাইপোগ্লাইসেমিক উপাদান রয়েছে যা ইনসুলিন বা সংবেদনশীলতাকে বারিয়ে স্বাভাবিক করে তোলে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
প্রজনন/যৌন ক্ষমতা বাড়াতে ডুমুর ফলের ভূমিকাঃ প্রজনন ক্ষমতা বা যৌন ক্ষমতা বাড়াতে ডুমুর ফল অত্যন্ত কার্যকরী। কিন্তু এর মানে এই নয় যে ডুমুর ফল যৌন রোগের ঔষধ। তবে ডুমুর ফলের মধ্যে বিশেষ কিছু উপাদান রয়েছে যেমন খনিজ পদার্থ, ভিটামিনস, প্রোটিন ইত্যাদি যা আপনার প্রজনন স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে। ডুমুর ফলের মধ্যে রয়েছে বিশেষ কিছু খনিজ পদার্থ যেমন ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানি এবং দস্তা।
এই উপাদানগুলি আপনার দেহ ও মনকে সতেজ, উর্বর ও প্রাণবন্তর রাখতে সাহায্য করে যা প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়াও ডুমুর ফলের মধ্যে রয়েছে প্রোটিন ও ভিটামিন যা আপনার এস্পার্ম বা শুক্রানুর পরিমাণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। তাই প্রজন্ম স্বাস্থ্য ও যৌন স্বাস্থ্য কে ভালো রাখার জন্য আমাদের খাদ্য তালিকায় ডুমুর ফলকে রাখা উচিত।
ডুমুর ফলের অপকারিতা
ডুমুর ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুন অনেক। ডুমুর ফলে উপকারিতার পাশাপাশি কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা রয়েছে। ডুমুর ফল পরিমাণ মতো ও নিয়ম মেনে খেলে যেমন উপকার হয়। ঠিক তেমনি নিয়ম না মেনে বা অধিক পরিমাণে ডুমুর ফল খেলে দেহের মধ্যে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা দেখা দেয়। আর এখন আমরা ডুমুর ফলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা সম্পর্কে জানব।
অধিক পরিমাণে ডুমুর ফল খেলে এলার্জি হতে পারে। কারণ ডুমুরের গাছে প্রাকৃতিক ল্যাটেক্স নামে এক প্রকার উপাদান থাকে। ফলে যাদের এলার্জির সমস্যা আছে তাদের জন্য ডুমুর ফলের আঠা এবং অতিরিক্ত মাত্রায় ডুমুর ফল খাওয়া ক্ষতিকর অর্থাৎ যাদের এলার্জির সমস্যা রয়েছে ডুমুর ফল খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
ডুমুর ফলের মধ্যে যেহেতু অধিক পরিমাণে ফাইবার থাকে তাই স্বাভাবিক পরিমাণে ডুমুর ফল খেলে যেমন কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয় আবার অধিক পরিমাণে ডুমুর ফল খেলে অন্ত্রে ও পেটে ব্যথা হওয়ার পাশাপাশি ডায়রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অধিক মাত্রায় ডুমুর খেলে রক্ত পাতলা হয়ে যেতে পারে এবং কখনো কখনো হঠাৎ করেই নাক ও মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে।
ডুমুর ফল স্বাভাবিক মাত্রায় এবং পরিমাণ মতো খেলে যেমন দেহের ওজন কমাতে বা হ্রাস করতে সাহায্য করে। আবার অতিরিক্ত মাত্রায় দুমুর খেলে ওজন বৃদ্ধির কারণও হতে পারে।
ডুমুর ফলের মধ্যে প্রাকৃতিক চিনির উপাদান রয়েছে। তাই যাদের ডায়াবেটিকস আছে তাদের অবশ্যই ডুমুর ফল পরিমাণ মতো অথবা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খেতে হবে। কারণ বেশি পরিমাণে ডুমুর ফল খেলে ডায়াবেটিসের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। এবং দাঁতেরও ক্ষতি হতে পারে যেমন দাতে পচোন ধরতে পারে।
ডুমুর ফল খাওয়ার নিয়োম
ডুমুর ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ অধিক পরিমাণে রয়েছে যদিও এর অপকারিতা নেই বললেই চলে কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে ডুমুর ফলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে আমরা এই আর্টিকেলটিতে আলোচনা করেছি। ডুমুর ফলের মধ্যে যেমন অধিক পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে তেমনি এই ফল কাঁচা, পাকা এবং শুকনো অবস্থায় খাওয়া যায়। সবজি হিসেবেও ডুমুর ফল অনেক সুস্বাদ। এছাড়াও ডুমুর ফলের বিভিন্ন রেসিপি রান্না করে খাওয়া যায়। চলুন তাহলে ডুমুর ফল খাওয়ার নিয়ম গুলো সম্পর্কে জেনে নেই।
- কাঁচা ডুমুর ফলের বিভিন্ন ধরনের রেসিপি রান্না করে খাওয়া যায়। তবে কিভাবে রান্না করবেন এটা আপনার উপর নির্ভর করে। কারণ ডুমুর ফল রান্নার নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম নেই। আপনি চাইলে সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণের ভরপুর এই ফলটির বিভিন্ন ধরনের শাক সবজির সঙ্গে বিভিন্ন রকম রেসিপি আপনার মনের মত করে রান্না করতে পারেন। যেমন-সবজি, সালাত, ভাজি, ভর্তা ইত্যাদি।
- কাঁচা ডুমুর ফল প্রতিদিন দুই তিনটা করে খালি মুখে চিবিয়ে খেতে পারেন এতে করে শরীরের বিভিন্ন রকম উপকার হবে। এছাড়াও কাঁচা ডুমুর বেটে মধু মিশিয়ে খেলে মেয়েদের মাসিকের সমস্যার অনেক উপকার হতে পারে। তবে নিয়ম মেনে খেতে হবে। যাদের হিচকির সমস্যা রয়েছে তারা যদি কাঁচা ডুমুর ফল কেটে পানিতে ভিজিয়ে সেই পানি খেতে পারেন তাহলে হিচকির সমস্যা অনেকাংশেই কমে যাবে।
- শুকনা ডুমুরে অনেক উপকারিতা রয়েছে। শুকনো ডুমুরে রয়েছে পটাশিয়াম, ফাইবার, ম্যাগনেসিয়াম এবং প্রচুর ভিটামিন। কাঁচা ডুমুর ভালো করে রোদে শুকিয়ে দুই থেকে তিন মাস সংরক্ষণ করা যায়। শুকনো ডুমুর খাবার বিভিন্ন রকম নিয়ম রয়েছে। শুকনো ডুমুর কেটে এক গ্লাস দুধের সাথে পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে একসঙ্গে খেলে যৌন স্বাস্থ্যের অনেক উপকার হয়। এছাড়াও শুকনো ডুমুর রাতে এক গ্লাস পানিতে ভিজিয়ে রেখে সকাল বেলা খালি পেটে সেই ভেজানো পানি ও ডুমুর খেলে দেহে বিভিন্ন রকম উপকার হয় ।
লেখকের শেষ মন্তব্য
ডুমুর ফলের উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুন সম্পর্কে লেখা এই আর্টিকেলটি পড়ে আশা করি ডুমুর ফলের গুনাগুন সম্পর্কে কিছু ধারণা পেয়েছে। তবে একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে যেকোনো জিনিসের মাত্রাতিরিক্ত সেবন করলে উপকারের তুলনায় অধিক পরিমাণে ক্ষতি সাধন করে। তাই আপনি ডুমুর ফল খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারে। এরকম গুরুত্বপূর্ণ ও তথ্যমূলক আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে ভুলবেন না। এতক্ষণ সময় ধরে আমাদের ওয়েবসাইটের পেজে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url