বহেরার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
বহেরার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন। বহেরা গাছ এবং ফল উভয়ই ঔষধি গুনাগুনের পরিপূর্ণ। বহেড়া ফল এবং গাছের নির্জাস আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে এবং বিভিন্ন ধরনের রোগ-ব্যাধি নিরাময় করে। আপনারা কি বহেরার উপকারিতা অপকারিতা এবং গুনাগুন সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন তাহলে টেনশনের কোন কারণ নেই। আমরা আজকের এই আর্টিকেলটিতে বহেরা ফলের উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ নিয়ে আলোচনা করব।
এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন বহেরার উপকারিতা অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ সম্পর্কে। আরো জানতে পারবেন বহেরা চুলের জন্য কি উপকার করে, বহেড়ার কাজ কি, অতিরিক্ত মাত্রায় বহেরা খেলে কি কি ক্ষতি হতে পারে, বহেরা অর্থ কি এবং বহেরা গুড়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
বহেরা কি / বহেরা অর্থ কি
বহেরা হচ্ছে ত্রিফলার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। কারণ ত্রিফলার মধ্যে যে তিনটি ঔষধি গাছ বা ফল রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো বহেরা। বহেরার বৈজ্ঞানিক নাম হল Terminalia Bellirica। বহেরাকে ইংরেজিতে বলা হয় Beleric অথবা Bastard Myrobalan। বহেরার বাংলা আরেকটি নাম হল বিভিতকি। তবে বেশিরভাগ মানুষ বহেড়া নামেই চিনে।
বহেরা ফল দেখতে দুই রকমের হয় একটি হলো ডিম্বাকৃতির আরেকটি হলো গোল। গ্রীষ্মকালে বহেরা গাছে প্রথমে ফুল হয় তারপর এই ফুল থেকে ফল হয় এবং শীতকালে বহেড়া ফল পরিপক্ক হওয়ার পর গাছ থেকে আপনা আপনি ঝড়ে পড়ে। এই ফল কাঁচা অবস্থায় সবুজ থাকে এবং পাকার পর লাল হয় এবং শুকিয়ে গেলে বাদামি ও হালকা হলুদ রং ধারণ করে।
বহেরা ফলকে আয়ুর্বেদ, সিদ্ধ এবং ইউনানী শাস্ত্রে বিভিন্ন ধরনের ভেষজ ওষুধ তৈরি করার জন্য হাকিম বা ডাক্তারেরা বহেরা ফলকে ব্যবহার করে থাকে। বহেরার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ অনেক যদিও অপকারিতা খুব কম। বহেড়া গাছের ফল, সাল, ডাল, পাতা এবং বাকোল এই সব কিছুই ঔষধি গুণে ভরপুর। বহেরা গাছ ভারতীয় উপমহাদেশের দেশগুলোতে বেশি দেখতে পাওয়া যায় যেমন ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, চীন ইত্যাদি।
বহেরার পুষ্টিগুণ উপাদান
বহেরাতে থাকা পুষ্টিগুণ উপাদান গুলোর মধ্যে রয়েছে শর্করা-৬৪.২%, আমিষ-৪.৮%, চর্বি-০.৫%, খনিজ পদার্থ-৫.৫%, ফাইবার-১০%। প্রতি-১০০ গ্রামে ভিটামিন-সি রয়েছে-৬০০ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-এ-৪০০মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম-১০০ মিলিগ্রাম, আয়রন-১০ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম-৪০০ মিলিগ্রাম, এবং ফসফরাস-১০০ মিলিগ্রাম।
বহেরার উপকারিতা / বহেরা খেলে কি হয়
বহেরা একটি ঔষধি ফল হিসেবে অনেক জনপ্রিয় । বহেরা ফল এবং গাছ বিভিন্ন প্রকারের গুনাগুনের পরিপূর্ণ থাকায় এর উপকারিতা অনেক। তাইতো প্রাচীনকাল থেকে আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বহেরা গাছের ছাল, পাতা, ডাল, শিকোড় এবং ফলটি বিভিন্ন প্রকারের ভেষজ ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহার হয়ে আসছে। আর এই ওষুধগুলো নানান ধরনের রোগের এন্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে।
বহেরার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ অনেক কিন্তু অপকারিতা নেই বললেই চলে। চলুন তাহলে গুনাগুনে ভরপুর এই ফলটির উপকারিতা সম্পর্কে জেনে নেই।
হাঁপানি ও কাশিঃ বহেরা ফল কাসি ও হাঁপানি রোগের উপশম করতে পারেন। কারণ বহেরা ফলের মধ্যে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যে উপাদানগুলো হাঁপানি ও কাশির প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। আপনারা যদি বহেড়া ফলের বীজের শাঁস পানিতে ভিজিয়ে দুই তিন ঘণ্টা পরপর খেতে পারেন তাহলে কাশি ও হাঁপানি ধীরে ধীরে দূর হবে। তবে এ ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়াই উত্তম।
হজম শক্তি বাড়ায়ঃ বহেড়া ফল পরিপাকতন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি ও হজমশক্তি বাড়াতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। বহেড়া ফলের গুড়া পানির সঙ্গে মিশিয়ে দিনে দুইবার খেলে হজমশক্তি অনেকাংশেই বৃদ্ধি পায়।এক্ষেত্রে যদি আপনার পরিমাণ জানা না থাকে তাহলে অবশ্যই হাকিমের পরামর্শ অনুযায়ী খাবে।
কৃমি ধ্বংস করেঃ বহেড়া ফলের মধ্যে থাকা গুণগুলোর মধ্যে আরেকটি অন্যতম গুণ হলো বহেরা অনেকাংশেই পেটের কৃমিকে ধ্বংস করতে সক্ষম। পরিমাণ মতো বহেড়া ফলের শ্বাসের গুড়া ডালিম পাতার রসের সঙ্গে মিশিয়ে সেবন করলে কৃমি নিধন হয়।
অনিদ্রা দূর হয়ঃ রাতে পরিপূর্ণ ঘুম হওয়ার ক্ষেত্রে বহেড়া অনেক কার্যকরী। রাতে যাদের ঠিক মত ঘুম হয় না তারা যদি প্রতিনিয়ত বহেরা ফলের গুড়া পানির সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারে তাহলে অনিদ্রা দূর হয় এবং রাতে পরিপূর্ণ ও তৃপ্তি সহকারে ঘুম হবে।
ফোলা এবং ব্যথার উপশমঃ দেহের কোন স্থান যদি ফুলে যায় অথবা ব্যথা অনুভব হয় তাহলে বহেরা গাছের ছাল পিশে ঐ ফোলা এবং ব্যথার জায়গায় লাগালে অনেক উপকার হয়।
আয়ু বৃদ্ধি করেঃ বহেরার আরেকটি অন্যতম গুণ হলো এটি আইু বর্ধক। প্রতিদিন এক কাপ পরিমাণ বহেরা ভেজানো পানি পান করলে আয়ু বেড়ে যায় বলে মনে করা হয়।
শ্বেতী রোগের নিরাময়ঃ বহেড়ার তেল শ্বেতী রোগের জন্য অনেক উপকারী। বহেরা ফলের তেলর প্রলেপ প্রতিদিন একবার অথবা অথবা দুইবার শ্বেতী চিহ্নিত স্থানে লাগালে।আশা করা যায়, অল্প দিনের মধ্যেই শ্বেতী রোগ দূর হবে এবং দেহের রং স্বাভাবিক হবে।
শ্লেস্মার নিরাময়ঃ বহেরা শ্লেস্মা নিরাময়ে উপকারী উপাদান। এর জন্য আধা চা-চামচ বহেরা ফলের গুড়ার সাথে পরিমাণ মতো মধু ও ঘি ভালোভাবে মিক্সার করে সামান্য গরম করে খেলে অনেক উপকার হয়।
এছাড়াও বহেরা ফল আরো বিভিন্ন ধরনের রোগের নিরাময়ক হিসেবে কাজ করে। যেমন-জ্বর, সর্দি, পাইলস, কুষ্ঠ রোগ, চুল পড়া ও হজম জনিত সমস্যা ইত্যাদি।
হার্টের সমস্যায় বহেরাঃ বহেড়া হার্টের সমস্যায় অনেক উপকারী। কেননা বহেরার নির্যাসে রয়েছে একপ্রকার কার্ডিওপ্রটেক্টিভ নামক উপাদান যা হার্টের স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও বহেরা (হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন)এইচ ডি এল কোলেস্ট্রল এর মাত্রা বৃদ্ধির পাশাপাশি লিপিড এবং ক্ষতিকারক(এল ডি এল)লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন এর মাত্রাকে হ্রাস করে এবং হার্ট সুরক্ষিত থাকে। ফলে হার্ট ফেল ও হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশেই কমে যায়।
ম্যালেরিয়ার জন্য বহেনাঃ ত্রিফলার তিনটি উপাদানের মধ্যে একটি হলো বহেড়া ফল যা ম্যালেরিয়া কারণে হওয়া জ্বরকে উপশম করতে সক্ষম। গবেষণায় দেখা যায়, বহেড়া ফলের মধ্যে থাকা ফাইটোকেমিক্যালগুলির মধ্যে ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ করা কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এছাড়াও বহেরা ফলের শাসের নির্যাসে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিপ্লাজমোডিয়াল যা ম্যালেরিয়াকে প্রতিরোধ করে। তাই বলা যায় জ্বর ও ম্যালেরিয়ার চিকিৎসার মোকাবেলায় বহেরা ফলের নির্জস ব্যাপক ভুমিকা পালন করে বলে মনে করে গবেষকরা।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বহেরাঃ ডায়াবেটিস একটি বংশগত রোগ। আর এই রোগ তখনিই দেখা দেয় যখন রক্তে হাইপারগ্লাইসেমিয়ার(গ্লুকোজকে ৫৪শতাংশ বৃদ্ধি করে)মাধ্যমে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। যদিও ডায়াবেটিস ভালো করার ঔষধ এখনো তৈরি হয়নি তবে ডায়াবেটিস কে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আর বহেরার নির্যাসে এমন কিছু উপাদান রয়েছে।
যে উপাদানগুলো রক্তের গ্লুকোজের পরিমাণকে স্বাভাবিক রাখার মাধ্যমে ডায়াবেটিসকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। এছাড়াও বহেড়ার নির্যাস রয়েছে মিথানোলিক উপাদান যা ডায়বেটিস রোগের উদ্বেগ গুলোর জন্য এন্টিডায়াবেটিক হিসেবে কাজ করে। তাই বলা যায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে বহেরা ফলের নির্জাস অনেক কার্যকারী উপকদান।
ডায়রিয়া ও পেটের সমস্যায় বহেরা
বহেরার উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ অধিক থাকা সত্ত্বেও যদি অতিরিক্ত সেবন করে তাহলে ডায়রিয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে। ডায়রিয়া একপ্রকার গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা। ডায়রিয়া হলে ঘন ঘন পাতলা ও জলযুক্ত মলত্যাগ হয়। ডায়রিয়া মূলত হয়ে থাকে বিভিন্ন প্রকারের ব্যাকটেরিয়া ও পরজিবির আক্রমণের কারণে। যেমন- অ্যামিবিসাইডাল বা অ্যামিবা, ই-হিস্ট্রোলাইটিকা এবং ই-কোলির মতো পরজিবি যা দেখতে ব্যাকটেরিয়ার মতই।
ব্যাকটেরিয়ার মত দেখতে পরজীবীগুলো যখন পরিপাকতন্ত্রে আক্রমণ করে তখন পেটের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হয়। যেমন ডায়রিয়া, সাদা বা রক্ত আমাশায়, বদহজম ইত্যাদি। আর এই ব্যাকটেরিয়ার মত দেখতে পরজিবিগুলোকে ধ্বংস করার জন্য বহেরা অত্যন্ত কার্যকরী ওষুধের মত কাজ করে।
কারণ বহেরা ফলের নির্যাসে এমন কিছু উপাদান রয়েছে যে উপাদানগুলো পরিপাকতন্ত্রকে এই সকল ব্যাকটেরিয়া ও পরজীবীর হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। পরিমান মত বহেরার গুড়া পানির সঙ্গে ভালোভাবে মিক্সার করে খেলে ডায়রিয়াজনিত সকল প্রকার পেটের সমস্যা দূর হয়ে যায়।
বহেরার অপকারিতা
বহেরা ফলের ব্যাপক গুনাগুন থাকায় এর উপকারিতা অনেক। কিন্তু এটি পরিমাণের অধিক ও অতিরিক্ত মাত্রায় সেবনে বিভিন্ন ধরনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও অপকারিতা দেখা দিতে পারে। নিচে বহেরার অপকারিতা সম্পর্কে বলা হলো।
- বহেরার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ ব্যাপক কিন্তু অতিরিক্ত মাত্রায় সেবন করলে বমি বমি ভাব, মাথাব্যথা ও পেট খারাপ হতে পারে।
- বহেরার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণের মাএা বেশি কিন্তু এলার্জি রয়েছে এমন মানুষের বহেরা সেবন করা উচিত নয়। কারণ বহেরা সেবনে এলার্জির লক্ষণ দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
- অধিক পরিমাণে বহেরা সেবন করলে এটি অন্যান্য ওষুধের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে অন্য কোন ওষুধ খাওয়া অবস্থায়বহেরা খেতে চাইলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন।
- মাত্র অতিরিক্ত বহেরা সেবন পুরুষের উর্বরতাকে প্রভাবিত করে।
- দুগ্ধ প্রদানকারী ও গর্ভবতী মহিলাদের বহেরা ফল খাওয়া উচিত নয়। এতে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও অসুবিধা দেখা দিতে পারে। আর যদি কোন কারনে বহেরা ফল খেতে চায় অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
- যাদের রক্ত পাতলা এবং ডায়রিয়ার সমস্যা রয়েছে তারা অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বহেরা ফল খাবেন অন্যথায় বহেরার ভুল প্রয়োগ এবং অতিরিক্ত সেবনে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এতে উপকারে তুলনায় ক্ষতি বেশি হয়।
- বহেরা সেবনে অনিয়ম ও ভুল হলে এটি পরিপাকতন্ত্রে থাকা শ্লেস্মার বিরোধিতা করতে পারে।
বহেরায় চুলের উপকারিতা
বহেরাতে চুলের উপকারিতা অনেক। বহেরা চুলের জন্য একটি কার্যকরী উপাদান। চুল মানুষের সৌন্দর্যকে বৃদ্ধি করার পাশাপাশি সুদর্শন করে তোলে। তাইতো ঝলমলে সুন্দর ঘন কালো ও লম্বা চুলের জনপ্রিয়তা অনেক। কিন্তু জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও অনেকেরিই আবার অল্প বয়সেই চুলের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। যেমন-চুল পেকে যায়, চুল ঝরে পড়ে ও টাক হয়, চুল ভেঙ্গে যায় ইত্যাদি সহ আরো অনেক সমস্যা দেখা দেয়। যেহুতু বহেরার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ অধিক থাকায় বহেরায় চুলের উপকারিতা রয়েছে ব্যাপক।
তাই এ সকল সমস্যা সমাধানে বহেরা ফল অনেক উপকারী। বহেড়া ফলের হেয়ারপ্যাক সঠিক নিয়মে তৈরি করে ব্যবহার করতে পারলে চুলের এ সকল সমস্যা অনেকাংশেই কমে যাবে। এবং চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে, চুল পড়া ও পাকা রোধ হবে, চুল ভেঙ্গে যাবে না এবং প্রিম্যাচিউর হেয়ার গ্রোয়িং রোদ হবে। তাহলে চলুন এবার বহেরা ফলের হেয়ার প্যাক তৈরির পদ্ধতি গুলো জেনে নেই।
হেয়ারপ্যাক তৈরির পদ্ধতিঃ প্রথমে কয়েকটা বহেরার ফল সংগ্রহ করতে হবে। তারপর সেই ফলগুলি পানি দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নেয়ার পর ফলগুলোর ছাল ছাড়িয়ে নিতে হবে। এবার ১০ থেকে ১৫ গ্রাম ছাল ও এক কাপ পরিমাণ পানি একসঙ্গে ব্লেন্ডারে দিয়ে ভালো করে ব্লেন্ডিং করে নিতে হবে। এখন ব্লেন্ডিং করা তরল পানিওটুকু ছাকনি দিয়ে ভালোভাবে ছেকে নিতে হবে। এবার এই পানি দিয়ে চুলের গোড়া সহ সম্পূর্ণ চুলগুলো ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। আর এই কার্যক্রমটি নিয়মিত একবার করতে হবে।
বহেরা গুড়ার উপকারিতা
ফল হিসেবে বহেরার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুণ যেমন ব্যাপক। তেমনি বহেরা গুড়ার উপকারিতাও অনেক। বহেরা গুড়ার গুণগত উপকারিতা রয়েছে ব্যাপক। বহেরা গুড়ায় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধির পাশাপাশি রক্তচাপ কমায়। বহেরা গুড়ায় আছে চর্বির উপাদান যা দেহের চর্বির চাহিদা মেটায়। এবং ত্বকের সুস্থতা ও চোখের স্বাস্থ্যকে বজায় রাখতে সাহায্য করে বহেরা গুড়া।
এছাড়াও বহেরা গুড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা পেটের হজম শক্তি বৃদ্ধি করে ও অন্ত্রের খাবার পচনে সাহায্য করে এবং পরিপাকতন্ত্রের কার্যক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে ফলে পেট ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা ও হজম জনিত সমস্যা দেখা দেয় না। বহেরা গুড়ায় আরো রয়েছে(লো-ক্যালোরি ও হাই-নিউট্রিশন)।
অল্প পরিমাণে ক্যালোরি ও অধিক মাত্রায় পুষ্টিগুণ যা দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে তবে তাতে ভিটামিন, খনিজ ও অন্যান্য পুষ্টি উপকারিতা দেওয়া থাকে। তবে এগুলো ছাড়াও বহেরা ফলের গুড়ায় আরো এমন কিছু পুষ্টিগুণ উপাদান রয়েছে যে উপাদানগুলি ডায়াবেটিস ও হৃদরোগ প্রতিরোধ করে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে।
শেষ কথা
বহেরার উপকারিতা ও অপকারিতা এবং পুষ্টিগুন সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। আরো জানতে পারলাম বহেরা চুলের কি কি উপকার করে ও কোন রোগের জন্য কিভাবে কাজ করে বহেরা। এবং আরো জানতে পারলাম বহেরা গুড়ার উপকারিতা সম্পর্কে। যদিও বহেরা ফলের উপকারিতা ব্যাপক কিন্তু তা সত্ত্বেও অন্যান্য ভেষজ ফল বা খাবারের ন্যায় বহেরার কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও অপকারিতা রয়েছে।
আর যখন আমরা বহেড়ার ভুল প্রয়োগ করি এবং অধিক মাত্রা সেবন করি তখন ইহার পার্শ্বপ্রতিয়া দেখা দেয়। এবং বিশেষ কিছু অবস্থায় যেমন গর্ভবতী মা, দুগ্ধ প্রদানকারী মা, এবং জটিল কোন রোগ থাকবে। এক্ষেত্রে আমার পরামর্শ হলো বহেরা ফল খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
এই আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে নিয়মিত আমাদের এই ওয়েবসাইটটি অবশ্যই ভিজিট করতে ভুলবেন না। কারণ প্রতিনিয়ত আমরা এই ওয়েবসাইটে স্বাস্থ সচেতনমূলক এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্যমূলক নিত্যনতুন আর্টিকেল পাবলিশ করে থাকি।ভালো লাগলে আর্টিকেলটি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। এতক্ষণ ধরে আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url